প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ লোক— আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকারি চাকরিজীবী, হাজতিদের ভোটের আওতায় আনা হচ্ছে।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপের সূচনা বক্তব্যে সিইসি এ কথা জানান। 

তিনি বলেন, 'আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করে ফেলেছি৷ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে ফেলেছি। ২১ লাখের বেশি মৃত ভোটার চিহ্নিত করেছি, যাদের অনেকে ভোট দিয়ে যেত, মিডিয়ায় এমন নিউজ দেখেছি। ৪৩ লাখের বেশি ভোটযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে পেরেছি।' 

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, 'নারী ও পুরুষের ভোটের ব্যবধান ৩০ লাখ ছিল। এখন ১৮ লাখে নেমে এসেছে। মানুষ বিশেষ করে নারীরা যে ভোটার হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল, আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছি।'

তিনি বলেন, 'বিশেষজ্ঞদের আলোচনা করে প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করছি। ভোটের দায়িত্বে যারা থাকেন প্রায় ১০ লাখ লোক— আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকারি চাকরিজীবী, হাজতি তাদের ভোটের আওতায় আনব। আমরা এবার এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি, আইনে আগেও ছিল।'

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, 'রাজনীতিবিদরা ঐকমত্য কমিশনে। তাদের দাওয়াত দিলে একটা দলের পক্ষে হয়তো কেউ একজন আসবেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ যারা— তাদের পাব কি না, সেটা নিয়ে আমাদের মধ্যে সন্দেহ ছিল। এজন্য আমরা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনাটা আরেকটু শেষের দিকে করব বলে ভাবছি।'

তিনি বলেন, 'রাজনীতিবিদরা বিভিন্ন আলোচনা, বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে, কীভাবে আইন হবে— এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছেন। সংস্কার কমিশন অনেকটা কাজ সেরে ফেলেছে— এজন্য আমরা হয়তো একটু হালকা বোধ করছি।'

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, 'আমাদের যে ইলেক্টোরাল রিফর্মস কমিশন, তারা আমাদের কাজটা অনেক হালকা করে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছে— মিডিয়ার সঙ্গে করেছে, সিভিল সোসাইটির সঙ্গে করেছে, বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করে সারা দেশে প্রায় ৬০০ জায়গায় মতবিনিময় করেছে বলা যায়। 

তিনি বলেন, 'সংস্কার কমিশন আমাদের কাজ হালকা করে দিয়েছে৷ তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাই আমাদের সংলাপ একটু দেরিতে হচ্ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচনের জন্য বারবার বলছি৷ আজকের সংলাপ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়। আপনাদের মতামত নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। মিডিয়াকে পার্টনার নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মিসইনফরমেশন, ডিসইনফেমেশন অ্যাড্রেস করার জন্য আপনাদের গুরুত্ব অনেক।'

সিইসি বলেন, 'আমরা একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যে এগিয়ে যেতে চাই। স্বচ্ছভাবে, আয়নার মতো করে নির্বাচন করতে চাই।'

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজের সঞ্চালনায় এই নির্বাচনী সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।