প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'মাঠে-ময়দানে যারা কাজ করেছেন, তাদের মুখ থেকে শুনব। কীভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে, সে অভিজ্ঞতাও আপনাদের অনেকের আছে। আপনারা দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ইসিতে। কোথায় হাত দেওয়া দরকার সে পরামর্শ দেবেন।'

আজ মঙ্গলবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংলাপে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে নির্বাচন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মতবিনিময় করছে নির্বাচন কমিশন।

সংলাপে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইসির আটজন সাবেক কর্মকর্তা ও একজন পর্যবেক্ষক উপস্থিত আছেন। সংখ্যায় কম হলেও তাদের কাছ থেকে গুণগত অভিজ্ঞতা নিয়ে আগামী নির্বাচনের পরিকল্পনা সাজাতে চান সিইসি। চার নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টরাও সংলাপে উপস্থিত আছেন। 

সূচনা বক্তব্যে সিইসি বলেন, 'আপনারা এখানে কাজ করেছেন। প্র্যাকটিক্যালি জড়িত ছিলেন, আপনারা আমাদের চেয়ে বেশি জানেন। কোথায় কোথায় গ্যাপস থাকে, যেখানে ম্যানিপুলেট করার সুযোগ থাকে, গ্যাপসগুলো যেন বন্ধ করতে পারি। এই পরামর্শ আমরা আপনাদের থেকে চাই।'

তিনি বলেন, 'আমরা শুধু আলোচনা করার জন্য আপনাদের দাওয়াত দিইনি। আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ ও মতামত নিয়ে আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়াটা সাজাতে চাই।'

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আছেন— ইসির সাবেক কর্মকর্তা মো. জাকরিয়া, ইসির সাবেক কর্মকর্তা খন্দকার মিজানুর রহমান, মো. নুরুজ্জামান তালুকদার, মিহির সারওয়ার মোর্শেদ, শাহ আলম, মীর মোহাম্মদ শাহজাহান, মিছবাহ উদ্দিন আহমদ, মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী, মাহফুজা আক্তার এবং পর্যবেক্ষক সংস্থা ফেমার প্রেসিডেন্ট মনিরা খান।

আলোচনায় অংশ নেওয়া ইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকের ভারপ্রাপ্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপ-সচিব, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন মিশনে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

সাবেক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন 'অনেক নতুন ইনিশিয়েটিভ নিয়েছি। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপতথ্য মোকাবিলা কেরতে হবে। আমি এটাকে নিয়েছি জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে, দেশের জন্য কিছু করার। বয়স আমার ৭৩ এর বেশি। আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই, কমিটমেন্ট সুন্দর গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া। এটা ইসির একার পক্ষে সম্ভব নয়, সবার সহযোগিতা লাগবে। সবাইকে নিয়ে এগোতে হবে।'

গত ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে 'সংলাপ পর্ব' শুরু করে ইসি। এ ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই পর্বে সংলাপ চলে। আজ দুপুরে আছে নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ। এই সংলাপ পর্ব এক থেকে দেড় মাস চলবে। নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গেও চলতি মাসে বসার কথা রয়েছে।

রোজার আগে ফেব্রুয়ারি প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন করবে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে। অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরের দিকে আলোচনা করা হবে বলে জানান সিইসি।