বাজার থেকে ২ হাজার ৪শ টাকা দিয়ে ইলিশ কিনেছেন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করা আউয়াল শেখ। নিয়মিত বাজারের অংশ হিসেবে বা শখ করে নয়, দুই সন্তানের আবদার মেটাতেই মূলত বাধ্য হয়েই তিনি ইলিশ কিনেছেন।

 

তবে ইলিশ খেয়ে আগের মতো স্বাদ পাননি ৩৭ বছর বয়সী আউয়াল শেখ। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা মা ইলিশ রান্না করলে আমরা ভাই-বোনরা পাশে বসে থাকতাম, ঘ্রাণেই মন নেচে উঠত। সেই ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ত তিন-চার বাড়ি। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে ইলিশের দাম হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে হারিয়ে যাচ্ছে স্বাদ।

আউয়ালের কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে তার ৬৫ বছর বয়সী বাবা ইদ্রিস শেখও বলেন, ‘আগে ইলিশ রান্নায় তেমন তেল লাগত না। ইলিশের তেলেই ইলিশ ভাজা যেত। কিন্তু এখন চর্বিযুক্ত ইলিশ পাওয়াই মুশকিল। বাঙালির ঐতিহ্য ইলিশ এখন তার নিজস্ব স্বাদ হারাচ্ছে। ’ 

গবেষণায় জানা গেছে, মাছের স্বাদ ও গন্ধ ছড়িয়ে থাকে অনেক রাসায়নিক উপাদানের ভেতর, যেগুলো আবার প্রজাতি, কাল বা পারিপার্শ্বিকতাভেদে ভিন্ন হতে পারে। মাছের স্বাদ ও গন্ধের মূল অংশটি তৈরি হয় গ্লুটামিক এসিড ও নিওক্লিওটাইডের সঙ্গে সোডিয়াম ও ক্লোরাইড আয়নের পারস্পরিক ঐক্য ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে। বিরল কিছু রাসায়নিক উপাদানও গুরুত্বপূর্ণ কোনো মাছের স্বাদ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। যেমন- পৃথিবীর সবচেয়ে মজাদার মাছের প্রতিযোগিতায় ইলিশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আটলান্টিক স্যামনের স্বাদের কারণটি হচ্ছে ‘আনসারিন’ নামের একটি বিরল এমাইনো এসিড। তেমনিভাবে ইলিশের অনন্য স্বাদ সৃষ্টিতে মূল ভূমিকা পালন করে এর চর্বি ও ফ্যাটি এসিড, যা অন্যান্য মাছের মতো পেটের অঙ্কীয়দেশে জমা না হয়ে বরং সারা দেহে, পেশি-কলার ভাঁজে ভাঁজে, কোষের পরতে পরতে সুষমভাবে বিন্যস্ত থাকে। তাই কাঁটা ছাড়িয়ে একবার জিভে তুলে দিলে ইলিশের নরম মাংস মার্শমেলোর মতো দ্রুত গলে যায়, স্বাদ সক্রিয় সুগন্ধি উপাদানগুলো লালায় মিশে সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে, মস্তিষ্কে দ্রুত সুখানুভূতি পৌঁছে দেয়। তাইতো ইলিশ দেশ-বিদেশের ভোক্তাদের কাছে এতটা মজাদার লাগে। ইলিশ একই সঙ্গে একটি অতি আমিষ, অতি চর্বির মাছ।

ফারাক্কা ব্যারেজে আটকে যাচ্ছে ইলিশের পথ
২০০৭ সালের এক গবেষণায় দেখানো হয়, ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণের পর গঙ্গার উজান অঞ্চলে ইলিশ ধরা ৮০-৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ২০২০ সালে রিসার্চগেটে (ResearchGate) প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, গঙ্গা নদীতে ভারতের তৈরি ফারাক্কা ব্যারেজ ইলিশের স্বাভাবিক অভিবাসনকে বাধাগ্রস্ত করছে। ব্যারেজের কারণে ইলিশের আকার ছোট হচ্ছে, প্রজনন কমছে এবং ধরা পড়ার পরিমাণও দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

গবেষকরা ফারাক্কার উজান ও ভাটির বিভিন্ন স্টেশনে সরেজমিনে জরিপ চালায়। দেখা যায়, ব্যারেজের ওপরের অংশে ধরা পড়া ইলিশের সংখ্যা ও আকার উভয়ই কম। বিশেষ করে পূর্ণবয়স্ক বা পরিপক্ব ইলিশ এখানে খুবই কম ধরা পড়ছে। তুলনামূলকভাবে ভাটিতে বড় ও মোটা ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। স্বাভাবিক সময়ে ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে উঠে আসে ডিম পাড়ার জন্য। কিন্তু ফারাক্কা ব্যারেজের কারণে এ যাত্রাপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলস্বরূপ, গঙ্গা নদীর উজানে প্রজননক্ষম মাছ পৌঁছাতে পারছে না, প্রজনন হারও হ্রাস পাচ্ছে। উজানে মূলত জাটকা বা কিশোর বয়সী ইলিশ বেশি পাওয়া গেলেও পরিপক্ব মাছের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অন্যদিকে ভাটিতে জীবজীবনের সব ধাপের ইলিশই ধরা পড়ছে। এতে বোঝা যায়, ব্যারেজ ইলিশের স্বাভাবিক যাত্রাপথ ব্যাহত করছে।

গবেষকরা বলছেন, বড় ইলিশে সাধারণত তেলের পরিমাণ বেশি থাকে যা মাছের স্বাদ বাড়ায়। কিন্তু ব্যারেজের ওপরের দিকে ছোট আকারের মাছ বেশি থাকায় স্বাদ ও বাজারমূল্য দুটিই কমছে। এতে মৎস্যজীবীদের আয়ে ধস নামছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ইলিশের টিকে থাকার স্বার্থে ফারাক্কা ব্যারেজে কার্যকর ফিশ-পাসেজ বা মাছ চলাচলের ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। পাশাপাশি অভিবাসন মৌসুমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণ কর্মসূচিও প্রয়োজন।

আকার ও স্বাদের অবনতি
২০২৫ সালে ন্যাচারে (Nature) প্রকাশিত এক গবেষণায় ইলিশের ডিম (roe) বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মাছের পুষ্টি ও স্বাদের বৈশিষ্ট্যে এলাকাভেদে স্পষ্ট পরিবর্তন ঘটছে। কক্সবাজার, চাঁদপুর ও পটুয়াখালী অঞ্চলের নমুনা তুলনায় দেখা যায়, পটুয়াখালীর ইলিশে স্বাদ ও পুষ্টি কিছুটা ভালো থাকলেও সামগ্রিকভাবে আগের তুলনায় গুণগত মান কমেছে।

অন্যদিকে সায়েন্স ডিরেক্ট (ScienceDirect) প্রকাশিত আরেক গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে, অতিরিক্ত মাছ ধরা ও নদীর প্রবাহ সংকটে ইলিশের গড় আকার ও ওজন ক্রমেই কমছে।

জলবায়ু পরিবর্তনে ইলিশ খুঁজছে নতুন ঘর
বঙ্গোপসাগরে ইলিশের প্রজনন এলাকা ও উৎপাদন ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, যা দেশের মৎস্যজীবীদের জীবিকা এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। সাম্প্রতিক তিনটি গবেষণা দেখিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন, নদী ব্যবস্থাপনা এবং অতিরিক্ত জাল ব্যবহার ইলিশ মাছের প্রজনন ও অভিব্যক্তি প্রভাবিত করছে।

গবেষণা অনুযায়ী, ইলিশ মাছের মূল প্রজনন এলাকা এখন হাটিয়া, সন্দ্বীপ ও ভোলা অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়েছে। পানির উচ্চ স্যালাইনিটি, নদীর সিল্টেশন বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক ভলিউম কমে যাওয়া মাছের প্রজনন হ্রাস করছে। ৩৫–৫০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের ইলিশের প্রজনন হার কমে ১.৫–২ মিলিয়ন ডিমে সীমিত হয়েছে।

বাঁধ ও পানি প্রত্যাহারের কারণে পদ্মা-যমুনা-মেঘনার প্রবাহ বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে ব্যাপকভাবে কমেছে। এতে নদীতে লবণাক্ততার মাত্রা বাড়ছে। মৎস্য অধিদপ্তরের জরিপে দেখা গেছে, মেঘনার মোহনায় শুষ্ক মৌসুমে লবণাক্ততা দ্বিগুণ হয়ে ১০ পিপিটিতে পৌঁছেছে।

এছাড়া নদীর জলপ্রবাহ কমে যাওয়ায় জলজ জীববৈচিত্র্যও হ্রাস পাচ্ছে। সাম্প্রতিক দুই দশকে ইলিশের উৎপাদন অভ্যন্তরীণ নদীতে প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে, তবে সামুদ্রিক জেলায় উৎপাদন কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিবর্তন নদী থেকে সমুদ্রের দিকে উৎপাদন স্থানান্তরের সূচক।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯০১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা আরও বাড়বে। অথচ ইলিশের প্রজননের আদর্শ তাপমাত্রা ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ডিম ফোটার হার কমছে, ইলিশের পোনার মৃত্যুহার বাড়ছে।  

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়ার বৈশ্বিক প্রবণতা বাংলাদেশের মৎস্যসম্পদ, বিশেষ করে ইলিশ খাতকে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ’

ইলিশ গবেষক আনিছুর রহমান সতর্ক করে বলেছেন, ‘ইলিশ মাছের উর্বরতা হ্রাস এবং প্রজনন এলাকা স্থানান্তর হলে ভবিষ্যতে মাছের উৎপাদন ও স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মাছ ধরা ও সংরক্ষণ পরিকল্পনা নেওয়া না হলে ইলিশ সম্পদ কমে যেতে পারে। ’

কয়লার ছায়ায় হ্রাস পাচ্ছে নদীর রাজা 
পায়রা অঞ্চলে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মিত এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আন্ধারমানিক নদীসহ দুটি ইলিশ অভয়ারণ্যের পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে নদীর পানি প্রবাহ ও গভীরতা কমে যাচ্ছে, যা ইলিশের প্রজনন ও জীবনচক্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

২০২০ সালের মার্চে প্রকাশিত Fish Diversity in the Andharmanik River Sanctuary in Bangladesh (বাংলাদেশের আন্ধারমানিক নদী অভয়ারণ্যে মাছের বৈচিত্র্য) শিরোনামের গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, আন্ধারমানিক নদীর মাছের বৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে। গবেষণায় ৯৩টি মাছের প্রজাতি চিহ্নিত হয়েছে, যার মধ্যে ১৪ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ, ১১ শতাংশ বিপন্ন এবং ৬ শতাংশ গুরুতর বিপন্ন। এই হ্রাসের প্রধান কারণ হিসেবে অবৈধ মাছ ধরা, বাসস্থান ও পানি প্রবাহে বাধা এবং পরিবেশগত সংযোগের অভাব চিহ্নিত করা হয়েছে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের ডিন অধ্যাপক কাজী আহসান হাবিব বলেন, ‘ইলিশ একটি সংবেদনশীল প্রজাতি। বাসস্থানের পরিবর্তনের ফলে এর অভিব্যক্তি ও গতিপথও প্রায়শই পরিবর্তিত হয়। নদ–নদীর গভীরতা কমে যাওয়া, দূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত কারণে ইলিশের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রাবনাবাদ নদী ও বরগুনার পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর মোহনায় নির্মিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং উক্ত অঞ্চলে শিল্পায়ন ইলিশকে প্রজনন ও বেড়ে ওঠার প্রাকৃতিক পথ পরিবর্তনের দিকে বাধ্য করছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ইলিশ উৎপাদনে। ’ 

কমেছে উৎপাদন, বাড়ছে দাম
বিশ্বে মোট ইলিশ উৎপাদনের ৮৬ শতাংশই বাংলাদেশে হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে ইলিশের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর তাই এ বছর ইলিশ জোটেনি অনেক মধ্যবিত্তের পাতেও। তবে সরবরাহের ‘ঘাটতি ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের’ কারণে ভরা মৌসুমেও ইলিশ মাছের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

২০২৫ সালে বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদন গত কয়েক বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ইলিশ আহরণ হয়েছিল ৫ লাখ ৭১ হাজার টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কমে ৫ লাখ ২৯ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ এক বছরে প্রায় ৪২ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন কমেছে। এ বছর জুলাই-আগস্টে ভরা মৌসুমে আহরিত ইলিশের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৯,৫১৯.৪৬ টন।

বলা হয়ে থাকে, গত এক দশকে ইলিশ উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিগত সরকারের দেওযা হিসাব মতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫ লাখ ১৭ হাজার টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ লাখ ৫০ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৭ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল। এই সময়ে গড়ে উৎপাদন বেড়েছে আড়াই শতাংশের বেশি।

তবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে নদী দূষণ, অবৈধ জাল ব্যবহার, জাটকা নিধন এবং প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়া অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাতে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ২০১০ সালে ইলিশের কেজি ছিল ৪১৭ টাকা, ২০১৯ সালে ৭৮৯ টাকা আর ২০২৫ সালে এসে ইলিশের কেজি ঠেকেছে সাড়ে তিন হাজার টাকায়, যা সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে।

তবে দামের বিষয়ে কাজী আহসান হাবিব বলেন, ‘বিগত সরকার বারবারই উৎপাদন বেশি দেখিয়েছে। সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা উচিত যে আদতে ইলিশের উৎপাদনে আমারা কতদূর এগিয়েছি। উৎপাদন যদি পর্যাপ্ত থাকতো তাহলে এভাবে দাম হু হু করে আকাশচুম্বি দাম না ।  

ইলিশের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হতে থাকলে ইলিশ উৎপাদন কমতেই থাকবে বলেও জানান তিনি। পাশের দেশ মিয়ানমার ইলিশ আহরণে অনেকটাই এগিয়েছে বলেও তিনি তথ্য দেন।  

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু কাওসার দিদার বলেন, ‘ইলিশ আহরণের কমতির প্রধান কারণ হলো নদীর গতিপথের পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং পলি জমে চর জেগে ওঠা। ’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।

পিএ/এনডি