নির্বাচনের পর প্রায় আট মাস কেটে গেছে। এই সময়ের অর্জন ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

প্রেসিডেন্ট তাবিথ আউয়াল এই সভায় তুলে ধরেছেন তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জের কথা।

তাবিথ বলেন, “নির্বাচনের পর এই আট মাসে কী করেছি, কোন জায়গায় সফল হয়েছি, কোথায় পিছিয়ে পড়েছি—এসব জানাতেই এই আলোচনা। এমন আয়োজন হলে জবাবদিহিতা থাকে, আমরাও আমাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে মূল্যায়নের সুযোগ পাই। ছয় মাস পর পর এমন আয়োজন হলে সেটাই ভালো। ”

বাজেট ও চ্যালেঞ্জ

তাবিথ আউয়াল জানান, এবারের জাতীয় বাজেটে ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ক্রীড়া খাতে। কিন্তু এই বরাদ্দের বড় অংশ চলে যায় প্রশাসনিক খাতে। ফুটবলারদের উন্নয়নে আরও বেশি বাজেট প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“বিগত কমিটি বছরে ৩০ কোটি টাকা সরকারের কাছে চেয়েছিল। আমরা এখনো তেমন কিছু চাইনি। আমরা চেষ্টা করছি স্পনসর ও অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে, যাতে উন্নয়নে ব্যবহার করা যায়,” বলেন তাবিথ।

তিনি ক্রীড়া সামগ্রীর উপর ৩৬ শতাংশ শুল্ককে 'অক্রীড়া-বান্ধব' হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “ভারতে ক্রীড়া সামগ্রীর ওপর কর ১২ শতাংশ। আমাদের দেশেও তা কমিয়ে আনা উচিত। ”

শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, ভালো প্রস্তুতি

নারী ও পুরুষ উভয় দলকে আরও উন্নত করতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলানোর কথা বলেন বাফুফে সভাপতি। তার ভাষায়, “এশিয়ান কাপ, অলিম্পিক বাছাই, বিশ্বকাপ বাছাই সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতির মান উন্নত করতে হবে। এজন্য শক্তিশালী দলের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলা জরুরি। ”

মাঠ, সরঞ্জাম ও পারফরম্যান্স

তাবিথ আউয়াল বলেন, “এক সময় অভিযোগ ছিল, মাঠ, জার্সি, ইকুইপমেন্ট সবই নিম্নমানের। সেই জায়গায় আমরা উন্নতির চেষ্টা করছি। মাঠে নামলে যেন দলের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা থাকে, সেটা নিশ্চিত করাই লক্ষ্য। ”

তৃণমূল, বয়সভিত্তিক ও নারী ফুটবল

জেলা ফুটবল চালু না হলেও বয়সভিত্তিক কাঠামো গড়ার কাজ চলছে বলে জানান বাফুফে সভাপতি। সেই সঙ্গে চলছে নারী ফুটবলে উন্নয়নের কাজ। তিনি বলেন, “অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবল চলছে, চরে, পাহাড়ে, বিচে, রাস্তায় এবং মাঠে আমরা ফুটবল ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছি। নারীদের উন্নয়নে বড় দলের সঙ্গে খেলানো হয়েছে। জর্ডান, ইন্দোনেশিয়ার মতো দলের সঙ্গে খেলেছে ও ড্র করেছে। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। ”

প্রিমিয়ার লিগ ও ক্লাব উন্নয়ন

দেশের প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাব স্পন্সর পায় না। তারা নিজেদের টাকায় কিংবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে টাকা যোগাড় করে ক্লাব চালায়। আগামীতে সচ্ছলতা ফিরলে ক্লাবের জন্য স্পন্সর মানির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাবিথ, “এখনো ক্লাবগুলো ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় চলে। আমরা চেষ্টা করছি স্পন্সরের ব্যবস্থা করতে। সফল হলে ক্লাবগুলোর সচ্ছলতা ফিরে আসবে। ”

মাঠ উন্নয়ন

আগামী ছয় মাসের মধ্যে মাঠের উন্নতির আশ্বাস দিলেন তাবিথ। বাফুফে প্রধান বলেন, “জাতীয় স্টেডিয়াম ফিরে পেয়েছি, কিন্তু ট্রেনিং ও লিগের জন্য নির্ধারিত মাঠগুলোর অবস্থা এখনো উন্নত করা যায়নি। তবে আগামী ছয় মাসে এই জায়গায় উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। ”

এআর/এমএইচএম