হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল কবে চালু হবে তার সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ হয়নি বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি সই করতে হবে এবং তাদের প্রস্তুতি নিতে কয়েক মাস সময় লাগবে।'
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, এখানে আমাদের ২১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এই খরচ মেটানোর জন্য আমরা যত দ্রুত এটা চালু করতে পারি সেই চেষ্টা করছি।
উপদেষ্টা বলেন, 'আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে, ক্যাব থেকে সবাই আমরা একত্রে চেষ্টা করছি যত দ্রুত করা যায়। দুঃখজনকভাবে আপনারা যে সুনির্দিষ্ট একটি তারিখ চাচ্ছেন আমাদের কাছে, এটা আমাদের কাছে এই মুহূর্তে নাই। কারণ আমাদের লক্ষ্য হয়তো মনে মনে কিছু আছে, কিন্তু সেই লক্ষ্যগুলো আমাদের যদি আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো নাই যে আমরা আপনাদেরকে লক্ষ্যটা জানাতে পারি।'
তৃতীয় টার্মিনাল নিয়ে জাপানি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান বলেন, 'তাদের সঙ্গে আলোচনা এখনো শেষ হয়নি।'
প্রকল্প কর্মকর্তারা এর আগে জানিয়েছেন, তৃতীয় টার্মিনালের প্রায় ৯৯ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এর আগে বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছে যে এই বছরের ডিসেম্বর থেকে যাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালটি ব্যবহার করতে পারবেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে একটি জাপানি কনসোর্টিয়ামের কাছে হস্তান্তরের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রাথমিকভাবে দুই বছরের জন্য বিমানের হাতেই গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং সেবা পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অত্যাধুনিক এই টার্মিনালটি আংশিকভাবে উদ্বোধন করেছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তৃতীয় টার্মিনালে সরকার ৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে বাকি অর্থ এসেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ঋণ হিসেবে।
উপদেষ্টা বশিরউদ্দিন আজ বিমানের চেয়ারম্যান হিসেবে তার সাম্প্রতিক নিয়োগ নিয়ে স্বার্থের সংঘাঘ হয়নি বলে জানিয়েছেন। যদিও তিনি একইসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করছেন।
তিনি বলেন, তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন একাধিক প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে তিনি একইসঙ্গে উপদেষ্টাও।
'যদি সেগুলোতে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট না হয়, তবে বিমানের ক্ষেত্রে কেন হবে,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।
একইসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বশিরউদ্দিন আরও বলেন, বিমানের বোর্ডে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রধানরা রয়েছেন। 'যদি তারা বোর্ডে থাকতে পারেন, তাহলে একজন উপদেষ্টা কেন থাকতে পারবেন না?'
'আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা না করে, গরীব মানুষ কীভাবে বিমানের দুর্বৃত্তায়নের কাছে জিম্মি সেটা নিয়ে অনুসন্ধান করুন,' বলেন উপদেষ্টা।
মন্তব্য
আপনার মতামত দিন
সাম্প্রতিক মন্তব্য
সাকিব আহমেদ
২ দিন আগেখুব গুরুত্বপূর্ণ একটি খবর। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঠিক প্রতিফলন দেখা গেছে। ধন্যবাদ!